সিরাজউদ্দৌলা নাটকের প্রশ্ন উত্তর - সিরাজউদ্দৌলা নাটকের চরিত্র

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের প্রশ্ন উত্তর - সিরাজউদ্দৌলা নাটকের চরিত্র, সিরাজউদ্দৌলার মায়ের নাম কী? উত্তর: আমিনা বেগম। ৬. 'সিরজউদ্দৌলা নাটকে শেষ সংলাপ কার? (রা. বো. ২০১৭). উত্তর: মোহাম্মদি বেগের।

Aug 17, 2024 - 06:59
Aug 17, 2024 - 07:09
 0  11
সিরাজউদ্দৌলা নাটকের প্রশ্ন উত্তর - সিরাজউদ্দৌলা নাটকের চরিত্র
সিরাজউদ্দৌলা নাটকের প্রশ্ন উত্তর - সিরাজউদ্দৌলা নাটকের চরিত্র

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের প্রশ্ন উত্তর

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের প্রশ্ন উত্তর - সিরাজউদ্দৌলা নাটকের চরিত্র, সিরাজউদ্দৌলার মায়ের নাম কী? উত্তর: আমিনা বেগম। ৬. 'সিরজউদ্দৌলা নাটকে শেষ সংলাপ কার? (রা. বো. ২০১৭). উত্তর: মোহাম্মদি বেগের।

নবাব সিরাজউদ্দৌলা নাটক সৃজনশীল প্রশ্ন 

‘কত বড় শক্তি, তবু কত তুচ্ছ’-উক্তিটি ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: ইংরেজদের থেকে শক্তিমত্তায় বড় হয়েও ষড়যন্ত্র-কারীদের বিশ্বাসঘাতকতায় পরাজয়ের সম্ভাবনা দেখে নবাব উক্তিটি করেছেন। পলাশির যুদ্ধে নবাবের সৈন্য সংখ্যা ছিলো পঞ্চাশ হাজারের বেশি, অন্যদিকে ইংরেজদের সৈন্য সংখ্যা ছিল আনুমানিক তিন হাজার। নবাবের তেপ্পান্নটি কামানের বিপরীতে ইংরেজদের কামান সংখ্যা ছিল মাত্র আটটি। সৈন্য ও শক্তিতে নবাব ইংরেজদের থেকে অনেক শক্তিশালী হলেও মিরজাফরদের বিশ্বাসঘাতকতার জন্য নিজ বাহিনীকে তুচ্ছ মনে হচ্ছিল তাঁর।

“শুভ কাজে অযথা বিলম্ব করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়।”-ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার সময় ইংরেজদের সাথে ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে তর্ক শুরু হলে মিরজাফর উক্তিটি করেন।

নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের এক পর্যায়ে মিরনের আবাসে সকলের ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে সভা বসে। নবাবের পরাজয়ে কে কত টাকা পাবে তা নিয়ে তর্ক শুরু হয় তাদের মাঝে। তবে মিরজাফর দ্রুত চুক্তিটি সম্পাদন করতে চেয়েছিলেন। তাই তিনি প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করেন।

“ব্রিটিশ সিংহ ভয়ে লেজ গুটিয়ে নিলেন”-কে, কেন বলেছে? 

উত্তর: এতো সিরাজের বাহিনীর তীব্র আক্রমণে ইংরেজরা একে একে  ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ ছেড়ে পালিয়ে গেলে তাদের প্রতি ব্যঙ্গ করে উমিচাঁদ এ উক্তিটি করেন।

 ফোর্ট উইলিয়াম দূর্গ ও কাশিমবাজার কুঠিতে ইংরেজরা গোপনে তাদের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে থাকলে নবাব সিরাজ তাদের দুর্গ আক্রমণ করেন। নবাবের সৈন্যদলের আক্রমণের মুখে যখন ইংরেজ সৈন্যরা আর টিকতে পারছিল না, তখন তারা একে একে দুর্গ ছেড়ে পালাতে থাকে। এমনকি গভর্নর রোজার ড্রেক আর ক্যাপ্টেন ক্লেটনও দুর্গ ছেড়ে নৌকা করে পালিয়ে যান। তাদের এ কাপুরুষতাকে কটাক্ষ করে উমিচাঁদ হলওয়েলকে লক্ষ করে উক্তিটি করেন।

 

তার নবাব হওয়াটাই আমার মস্ত ক্ষতি।’ ঘসেটি বেগমের এ উক্তির কারণ কী?

উত্তর: সিরাজউদ্দৌলার মা আমিনাকে উদ্দেশ্য করে ঘসেটি বেগম কথাটি বলেন।

ঘসেটি বেগমের ধারণা, বৃদ্ধ নবাব আলিবর্দি খাঁকে ভুলিয়ে সিরাজ সিংহাসন দখল করেছে। আর সেই সিরাজ এখন তার সৌভাগ্যের অন্তরায়। কারণ তিনি চেয়েছিলেন তার পালিত পুত্র একরামউদ্দৌলা সিংহাসনে বসবে। কিন্তু তা না হওয়ায় এবং সিরাজ নবাব হওয়ায় তার নবাবমাতা হবার স্বপ্ন নষ্ট হয়, যা ছিল তার মস্ত ক্ষতি।

See More: বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় সাধারণ জ্ঞান ২০২৪

“আল্লাহর কাছে মাফ চেয়ে নাও শয়তান।”- কে, কোন প্রসঙ্গে এ কথাটি বলেছে?

উত্তর: “আল্লাহর কাছে মাফ চেয়ে নাও শয়তান।” উক্তিটি মিরন সিরাজউদ্দৌলাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন।

পলাশির যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর সিরাজকে জাফরাগঞ্জ কয়েদখানায় আটক রাখা হয়। সে সময় মিরন এসে তাকে জানায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে সে যেন আল্লাহর কাছে মাফ চেয়ে নেয়।

 

“তুমিও আমাকে বিচার করতে বসলে?” কোন প্রসঙ্গে বলা হয়েছে? সংক্ষেপে বর্ণনা কর।

উত্তরা: তুমিও আমাকে বিচার করতে বসলে” উক্তিটি সিরাজউদ্দৌলা তার স্ত্রী লুৎফাকে উদ্দেশ্য করে অভিমান করে বলেছেন।

ষড়যন্ত্রের জালে পিষ্ট হয়ে নবাব যখন লুৎফুন্নেসার কাছে গেলেন তখন সেও খানিকটা ঘসেটি বেগমের দুঃখ সিরাজের কাছে বলতে গিয়েছিল। ঘসেটি বেগম বিধবা মেয়ে মানুষ তার সম্পত্তি সিরাজের নামে চলে যাওয়ায় সে এমন করেছে। তখন সিরাজ অভিমান করে আলোচ্য উক্তিটি করেন এবং বলেন তার দাদুর কাছে দেয়া কথাই তিনি পালন করছেন।

 

হলওয়েল কে? ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের আলোকে তার পরিচয় দাও।

উত্তর: হলওয়েল ছিলেন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ডাক্তার। তিনি প্রথমে পাটনা ও ঢাকার অফিসে কিছু কাল চাকরি করে সার্জন হয়ে কলকাতায় আসেন। পলাশির যুদ্ধের সময় তিনি ফোর্টের অস্থায়ী গভর্নর নিযুক্ত হন। সিরাজউদ্দৌলা কলকাতা আক্রমণ করলে কোম্পানির গভর্নর ড্রেক, সৈন্যাধ্যক্ষ মিনচিনসহ সবাই নৌকায় চড়ে পালিয়ে যান। তখন ডা. হলওয়েল কলকাতার সৈন্যাধ্যক্ষ ও গভর্নর হন।

“পলাশিতে যুদ্ধ হয়নি, হয়েছে যুদ্ধের অভিনয়।” উক্তিটি ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: “পলাশিতে যুদ্ধ হয়নি, হয়েছে যুদ্ধের অভিনয়।” বলতে সিরাজউদ্দৌলা পলাশি যুদ্ধে হওয়া বিশ্বাসঘাতকতাকে বুঝিয়েছেন।

পলাশির যুদ্ধে নবাবের সেনাবাহিনীতে অনেকেই যুদ্ধ করেনি। তারা ইংরেজদের ষড়যন্ত্রে যোগ দিয়েছিল। ফলে সেনাপতিদের পরামর্শে নবাবকে যুদ্ধের ময়দান থেকে ফেরত আসতে হয়। যে ঘটনা পূর্বে কখনো নবাব সিরাজের জীবনে ঘটেনি।

 

‘আমরা এমন কিছু করলাম যা ইতিহাস হবে’-ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: এক নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যে চুক্তি করা হয় তাতে সকলে স্বাক্ষর প্রদানকালে রবার্ট ক্লাইভ উক্তিটি করেছেন। নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে ইংরেজদের সাথে হাত মিলিয়েছিল কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি। এজন্য মিরনের বাসভবনে সকলে মিলে এক ঘৃণ্য চুক্তি করে। মিরজাফর সামান্য ইতস্তত করলেও শেষ পর্যন্ত এই ঘৃণ্যচুক্তিতে স্বাক্ষর করে। যার ফলে বাংলার পরাধীনতার বীজ রোপিত হয়। রবার্ট ক্লাইভ এই চুক্তির ফলাফল অনুমান করেই উক্তিটি করেছেন।

 

‘দেশপ্রেমিকের রং যেন আবর্জনার স্তূপে চাপা না পড়ে।’-সংলাপটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর।

উত্তরা: ‘দেশপ্রেমিকের রং যেন আবর্জনার স্তূপে চাপা না পড়ে’ এখানে যুদ্ধে অংশ না নেয়া কাপুরুষদের কথা বলা হয়েছে। পলাশির যুদ্ধে নবাবের সেনাবাহিনীর অনেকেই যুদ্ধে অংশ নেয়নি। তারা দেশের মাটির সাথে প্রতারণা করেছেন। তাদেরকে সিরাজ আবর্জনার সাথে তুলনা করেছেন। আর যারা নিজের স্বার্থের চেয়ে দেশের স্বার্থ বড় করে দেখেছেন এবং যুদ্ধ করে প্রাণ দিয়েছেন তারা দেশপ্রেমিক। সেইসব আবর্জনার স্তূপে দেশপ্রেমিকদের রক্ত তিনি চাপা পড়তে দিবেন না। আবারো যুদ্ধে অবতীর্ণ হবেন।

 

“ঘরের লোক অবিশ্বাসী হলে বাইরের লোকের পক্ষে সবই সম্ভব”-বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

উত্তর: “ঘরের লোক অবিশ্বাসী হলে বাইরের লোকের পক্ষে সবই সম্ভব”- উক্তিটি সিরাজউদ্দৌলার।

নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে তাঁর আত্মীয় পরিজন ও অমাত্যবর্গরা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। কীভাবে নবাবকে সিংহাসনচ্যুত করা যায় ও নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করা যায় সেই ভাবনায় তারা একত্রিত হয়। এই সুযোগ গ্রহণ করে ইংরেজরা। সার্বিক পরিস্থিতি আঁচ করে সিরাজউদ্দৌলা উক্তিটি করেন।

‘এ সময়ে এভাবে এখানে আসা খুবই বিপজ্জনক’। -উক্তিটির কারণ ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: ‘এ সময়ে এভাবে এখানে আসা খুবই বিপজ্জনক’-উক্তিটি মিরজাফরের এবং সিরাজের গুপ্তচরের ভয়ে তিনি এ কথা বলেছিলেন।

মিরনের আবাসে মিরজাফর সহ কোম্পানির লোকজন সম্মিলিত হয়েছিলেন। কিন্তু চারিদিকে নবাবের গুপ্তচরেরা কাজ করছিল। আর এমন পরিবেশে নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে অংশ নিতে এসেছিল খোদ ক্লাইভ ও ওয়াট্ট্স। আর তাই ধরা পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকেই মিরজাফর আলোচ্য উক্তিটি করেছিলেন।